Archive for the ‘প্রতিবেদন’ Category

সার্জেন্ট জহুরুল হক (জন্মঃ ৯ ফেব্রুয়ারি , ১৯৩৫ – মৃত্যুঃ
১৫ ফেব্রুয়ারি , ১৯৬৯) আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম
আসামী ও শহীদ ব্যক্তিত্ব।
image

জহুরুল হক ৯ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩৫ সালে নোয়াখালী জেলার
সোনাপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৩
সালে নোয়াখালী জেলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন।
এবং ঐ বছরই পাকিস্তান বিমানবাহিনীতে যোগদান
করেন। কালক্রমে তিনি ‘সার্জেন্ট’ পদে উন্নীত হন। ১৯৬৭
সালের ডিসেম্বর মাসে পাকিস্তান
সেনাবাহিনীতে কর্মরত অবস্থায় গ্রেফতার হন সার্জেন্ট
জহুরুল হক। পরবর্তীতে সার্জেন্ট জহুরুল হককে ঢাকা কেন্দ্রীয়
কারাগারে আটকে রাখা হয়। ৬ জানুয়ারি, ১৯৬৮ সালে ২
জন সি. এস. পি অফিসারসহ ২৮জনকে গ্রেফতার করা হয়।
তাঁদের গ্রেফতার সম্পর্কে সরকারী প্রেসনোটে উল্লেখ
করা হয় যে,

“গত মাসে (অর্থাৎ ডিসেম্বর, ১৯৬৭)
পূর্ব-পাকিস্তানে উদ্ঘাটিত জাতীয়
স্বার্থবিরোধী এক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত
থাকার অভিযোগে এঁদের গ্রেফতার
করা হয়েছে।”

তৎকালীন পাকিস্তান সরকার এই
ষড়যন্ত্রকে “আগরতলা ষড়যন্ত্র” নামে অভিহিত করে। এই
একই অভিযোগে ১৭ জানুয়ারি, ১৯৬৮ সালে বিশিষ্ট
রাজনীতিবিদ ও স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা শেখ
মুজিবুর রহমানকেও গ্রেফতার করা হয়।
৩৫জনকে আসামী করে সরকার পক্ষ মামলা দায়ের করে।
তৎকালীন পাকিস্তান সরকার আগরতলা ষড়যন্ত্র
মামলাটির সরকারী নাম রেখেছিল ‘রাষ্ট্র বনাম শেখ
মুজিবুর রহমান ও অন্যান্যদের বিচার’। এই মামলায়
৩৫জনকে আসামী করা হয়। তন্মধ্যে –
১নং আসামী হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমানকে রাখা হয়।
সার্জেন্ট জহুরুল হককে ১৭নং আসামী হিসেবে উল্লেখ
করা হয়। প্রথমে আসামীদেরকে ‘দেশরক্ষা আইন’
থেকে মুক্তি দেয়া হয়। পরবর্তীতে ‘আর্মি, নেভি অ্যান্ড
এয়ারফোর্স অ্যাক্টে’ সার্জেন্ট জহুরুল হক-সহ অন্যান্য
আসামীকে পুণরায় গ্রেফতার করে সেন্ট্রাল জেল
থেকে কুর্মিটোলা সেনানিবাসে স্থানান্তর করা হয়। ১৯
জুন, ১৯৬৮ সালে মামলাটির শুনানি কার্যক্রম শুরু হয়।
রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিবুর রহমান ও অন্যান্যদের বিচার
শিরোনামের মামলার অভিযোগনামায় উল্লেখ
করা হয়েছিল যে,

“অভিযুক্তরা ভারতীয় অর্থ ও অস্ত্রের
সাহায্যে সশস্ত্র সংঘর্ষ
ঘটিয়ে কেন্দ্র থেকে পূর্ব
পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন
করে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন
করতে চেয়েছিল।”

মামলার স্থান হিসেবে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের
অভ্যন্তরে অবস্থিত ‘সিগন্যাল অফিসার মেসে’ নির্ধারণ
করা হয়। মামলার শেষ তারিখ ছিল ৬ই ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৯
সালে। প্রবল গণ-আন্দোলন তথা উত্তাল ঊনসত্তরের গণ-
অভ্যুত্থানের মুখে আইয়ুব খানের সরকার আগরতলা ষড়যন্ত্র
মামলা প্রত্যাহার করতে একান্ত বাধ্য হয়। ঊনসত্তরের
গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে দেশের মানুষ
স্বতঃস্ফূর্তভাবে তথাকথিত আগরতলা ষড়যন্ত্র
মামলা প্রত্যাহার ও শেখ মুজিবুর রহমান-সহ
অন্যান্যদের মুক্তির দাবী করেছিল। সরকার প্রধান
হিসেবে আইয়ুব খান সমগ্র পাকিস্তানের রাজনৈতিক
দলগুলোকে নিয়ে গোলটেবিল বৈঠক আয়োজন করতে বাধ্য
হয়েছিলেন। ঠিক এ সময়টিতেই সার্জেন্ট জহুরুল হকের
জীবনে মর্মান্তিক
ঘটনা ঘটে কুর্মিটোলা ক্যান্টনমেন্টে।
সার্জেন্ট জহুরুল হক বন্দীনিবাসে থাকাকালীন
সময়ে তাঁকে প্রহরার দায়িত্বে নিয়োজিত
পাকিস্তানী সৈনিকের হাতে থাকা রাইফেলের
গুলিতে বিদ্ধ হন। ১৪ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৯ তারিখের
সন্ধ্যায় ক্যান্টমেন্টে সৈনিকদের খাবারের উচ্ছিষ্ট
সংগ্রহের জন্য বাঙালি শিশুরা ভিড় করে।
এতে অবাঙালি সৈনিকেরা কয়েকজন অভুক্ত
শিশুকে ধরে এনে বন্দী শিবিরের
সামনে অমানবিকভাবে প্রহার শুরু করে।
কয়েকজন বন্দী এ ঘটনায় প্রতিবাদ জানালে হাবিলদার
‘মনজুর শাহ’ বন্দীদের নিজ নিজ কামরায়
ফিরে যেতে আদেশ করেন। জহুরুল হক সে আদেশ
উপেক্ষা করে মনজুর শাহের সঙ্গে তর্ক-বিতর্কে লিপ্ত
হয়ে পড়েন। এতে মনজুর শাহ প্রচণ্ডভাবে রাগান্বিত
হয়ে রাইফেলের বেয়োনেট লাগিয়ে তাঁর
দিকে ধেয়ে আসেন। কিন্তু সার্জেন্ট জহুরুল হক পাশ
কাটিয়ে আক্রমণকারীর হাত থেকে রাইফেল ছিনিয়ে নেন
এবং বিজয়ী বীরের মতো কামরার দরজায়
গিয়ে তাকে রাইফেল ফেরত দেন।’
পরদিন অর্থাৎ ১৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৯ তারিখ
ভোরবেলা জহুরুল হক ঘর থেকে বের হলে মনজুর শাহ
তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে। ঐ গুলিটি তাঁর পেটে বিদ্ধ
হয়। সঙ্গে সঙ্গে তাকে কম্বাইন্ড মিলিটারী হাসপাতাল
বা সিএমএইচে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ঐদিন রাত
৯টা ৫৫ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে
ছাত্রদের আবাসিক হলরূপে ইকবাল হলের নাম পরিবর্তন
করে। দেশের মুক্তির লক্ষ্যে তাঁর অসামান্য অবদানের
কথা বিবেচনায় এনে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ হলটির
নূতন নামকরণ করেন ‘সার্জেন্ট জহুরুল হক হল’।
এ ছাড়াও তার নামে বিমান বাহিনীর একটি ঘাটি ও আছে
যা “জহুর ঘাটি” নামে পরিচিত।
সার্জেন্ট জহুরুল হক স্বাধীনচেতা দেশপ্রেমিক সৈনিক
ছিলেন। তাঁর সহকর্মীদের ভাষায় –

“তাঁকে কখনো কাঁদতে দেখা যায়নি।
কোনো কারণে কারো কাছে মাথা নত
করেননি।”

এজন্যে সহকর্মী বন্ধুরা তাঁকে ‘মার্শাল’ বলে ডাকতেন।
তাঁর হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে আইয়ুব বিরোধী গণ-
আন্দোলন আরো গতি লাভ করে। ব্যাপক গণ-বিক্ষোভের
মুখে ২৫ মার্চ, ১৯৬৯ তারিখে আইয়ুব খান সরকারের পতন
ঘটে। তাঁর শহীদ স্মৃতি পূর্ব বাংলায়
বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে শাণিত করে তোলার
ক্ষেত্রে বলিষ্ঠ ও অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। এ গণ-
আন্দোলনের পথ ধরেই পরবর্তীতে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের
মাধ্যমে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ
প্রতিষ্ঠা লাভ করে ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১ সালে। জহুরুল হক
‘বাঙালি জাতির সূর্য সন্তান’ হিসেবে আখ্যায়িত
হয়ে থাকবেন চিরকাল।
সাঁতার কাটা, খেলাধূলা, ছবি তোলা, ছবি আঁকা, কাঠের
কাজ ইত্যাদি কর্মকাণ্ডে দক্ষতা ছিল তাঁর। সার্জেন্ট
জহুরুল হকের অঙ্কিত চিত্রকর্ম ঢাকা জাদুঘরে
সযত্নে সংরক্ষিত আছে।

সুত্রঃ উইকিপিডিয়া
ছবিঃ বা বি বা মিউজিয়াম

জামদানি, নকশী কাঁথা, ফজলি আম সহ ৬৬ টি পণ্যের প্যাটেন্ট নিয়েছে ভারত। ভৌগলিক নির্দেশক আইনের মাধ্যমে নিজেদের পণ্য (!) এই যুক্তিতে তারা এই পণ্যগুলোর প্যাটেন্ট করে নিয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী জামদানি কে অন্ধ্র প্রদেশ এর উপ্পাদা (Uppada) জামদানি হিসেবে, বাংলাদেশের নকশী কাঁথাকে পশ্চিম বাংলার পণ্য হিসেবে, বাংলাদেশের চিরচেনা ফজলি আমকে পশ্চিম বাংলার মালদা জেলার অধীনে প্যাটেন্ট করিয়েছে! এমনকি তারা এখন নজর দিয়েছে বাংলাদেশের ইলিশের উপর। বাদ যায় নি আমাদের রয়েল বেঙ্গল টাইগারও! হ্যাঁ পৃথিবী বিখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার যা আমরা জন্মের পর থেকে বাংলার বাঘ বলে ডেকে এসেছি। সেটারও স্বত্ব নিতে চলেছে ভারত। ভারত দাবি করছে যে এটির অরিজিন ভারতে, সে ভাবেই আন্তর্জাতিক প্যাটেন্ট করিয়েছে ভারত। এবং সেই সাথে নিজেদের প্রানী হিসেবে সংরক্ষণের নামে ‘ আন্তর্জাতিক প্রানী সংরক্ষণ সংস্থা’ থেকে মিলিয়ন ডলারের প্রজেক্ট নিয়েছে। আরও দুঃখ জনক যে আমাদের প্রধানমন্ত্রী ঐ প্রজক্টকে জয়েন্ট প্রজেক্ট হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে চুক্তি সই করেছেন, যেখানে বাংলাদেশ বাঘ সংরক্ষণে একটা ডলারও পাচ্ছে না, উলটো আমাদের জাতীয় পশু তাদের ভারতীয় বাঘ বলে স্বীকৃতি পাচ্ছে।[১] একটু ভেবে দেখেন তো ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগার’ যখন ‘রয়েল ইন্ডিয়ান টাইগার’ হয়ে যাবে কেমন লাগবে আপনার?? # যেভাবে প্যাটেন্ট নিলো ভারত ঃ অনেকেই ফেসবুক ব্লগের কল্যাণে এই বিষয়টা নিয়ে জেনে গেছেন। কিন্তু অনেকে এখনো বুঝতে পারছেন না ভারত কিভাবে আমাদের ঐতিহ্যবাহী পণ্যের প্যাটেন্ট নিয়ে নিলো। ব্যাখ্যাটা দিচ্ছি এখানে। ভারত Geographical Indicator (GI) নামের আইনের অধীনে রেজিস্টার খুলেছে যার মাধ্যমে পণ্যগুলো প্যাটেন্ট করিয়ে নিয়েছে। World Trade Organisation (WTO) এর সব সদস্য দেশ সমূহকে Trade Related Intellectual Property Rights (TRIPS) চুক্তির আওতায় এটি খুলতে হয়। চুক্তির ২২,২৩ এবং ২৪ এ লেখা আছে যে প্রতিটি দেশ GI Act 1999 এর আওতায় তার দেশের জনপ্রিয়, এক্সট্রাঅরডিনারী ও স্বতন্ত্র পণ্যগুলোকে প্যাটেন্ট ও সংরক্ষণ করতে পারবে। এই চুক্তির আওতায় ভারত এই ৬৬ টি পণ্য প্যাটেন্ট করিয়েছে। তারা আরও ১৫৮ টি পণ্যের তালিকা তৈরী করেছে প্যাটেন্ট করাবার জন্য, ভারতের চেন্নাই এর অধীনে। # যেভাবে পণ্যের স্বত্ব স্থির হয়: আন্তর্জাতিক বাণিজ্য তত্ত্বাবধান ও উদারীকরণের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) ২৩টি চুক্তির একটি হচ্ছে ‘বাণিজ্য- সম্পর্কিত মেধাস্বত্ব অধিকার চুক্তি বা ট্রিপস (ট্রেড রিলেটেড আসপেক্টস অব ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি রাইটস)। এই চুক্তির ২৭.৩(খ) ধারায় পৃথিবীর সব প্রাণ-প্রকৃতি- প্রক্রিয়ার ওপর পেটেন্ট করার বৈধ অধিকার রাখা হয়েছে। এই চুক্তিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যেসব প্রাকৃতিক, মানুষের তৈরি এবং কৃষিজাত পণ্য দীর্ঘকাল ধরে উৎপাদিত হয়ে আসছে, তার ওপর সংশ্লিষ্ট দেশের মালিকানা প্রতিষ্ঠার জন্য ভৌগোলিক নির্দেশক আইন করে নিবন্ধন করে রাখার বিধান রয়েছে। [২ – আমজনতা] # Geographical Indication (GI) কি? উইকিপিডিয়ার সংজ্ঞামতে Geographical Indication (GI) হলো একটি নাম বা সাইন যেটা নির্দিষ্ট একটি পণ্যের ব্যবহার করা হয় যা কোন একটি নির্দিষ্ট ভৌগলিক এলাকার (শহর বা দেশ) পণ্যের পরিচিতি বহন করে। Geographical Indication (GI) এর ব্যবহার ঠিক সারটিফিকেশনের মতো, এটি কোন পণ্যের কোয়ালিটি রেপুটেশন , স্বতন্ত্রতা, ঐতিহ্য মণ্ডিত বৈশিষ্ট্য নির্দেশ করে কোন একটি নির্দিষ্ট ভৌগলিক স্থানের বিপরীতে। Geographical Indication (GI) সাধারণত ঐতিহ্য বাহী পণ্য যা গ্রামীণ জনপদ প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম উৎপাদন করে আসছে। যেসব পণ্যের ভালো কোয়ালিটির জন্য বাজারে সুখ্যাতি আছে। প্রতিটি পণ্যের নামের সংরক্ষণ ও পরিচিতি নিশ্চিতের মাধ্যমে এর উৎপাদকরা কোয়ালিটি ঠিক রেখে বিনিয়োগ করতে পারে এবং একসাথে সবাই যেন উক্ত পণ্যে বিনিয়োগ করতে পারে সেই পথও খোলা রাখে। এছাড়া ট্রেডমার্ক এর মতো Geographical Indication (GI) এর মাধ্যমে কোন একটি ঐতিহ্যবাহী পণ্য কোন একটি দেশের ঐতিহ্যবাহী পণ্য হিসেবে পরিচিতি পায়। যা বিশ্ব বাজারে ঐ পণ্যের আলাদা একটা পরিচয় তুলে ধরে। এতে পন্যটি ঐ দেশের পণ্য হিসেবে খ্যাতি পায় এবং প্রতিযোগিতা মূলক বিশ্ব বাজারে নিজের অবস্থান ধরে রাখতে সক্ষম হয়। # TRIPS কি? World Trade Organisation (WTO) এর দ্বারা প্রণীত Trade Related Intellectual Property Rights (TRIPS) চুক্তিপ্ত্র বলে যে Geographical Indication বলতে এমন একটি পণ্যকে সনাক্ত করে যে পণ্য উৎপাদন , কোয়ালিটি , খ্যাতি ও অন্যান্য বৈশিষ্ট্য অত্যাবশ্যকীয় ভাবে একটি নির্দিষ্ট ভৌগলিক অঞ্চল ( যে কোন শহর বা দেশ হতে পারে) এর সাথে ওতপ্রোথভাবে জড়িত। Examples of geographical indications from the United States include: “FLORIDA” for oranges; “IDAHO” for potatoes; “VIDALIA” for onions; and “WASHINGTON STATE” for apples. ১১৯৪ সালে WTO এর এক বৈঠকে ১৫৫ টি দেশ ( মে ২০১২ অনুসারে) সম্মত হয় যে তারা একটি নির্দিষ্ট স্ট্যান্ডার্ডে আইন তৈরী করবে নিজ দেশের Geographical Indication গুলো সংরক্ষণের জন্য। There are, in effect, two basic obligations on WTO member governments relating to GIs in the TRIPS agreement: Article 22 of the TRIPS Agreement says that all governments must provide legal opportunities in their own laws for the owner of a GI registered in that country to prevent the use of marks that mislead the public as to the geographical origin of the good. This includes prevention of use of a geographical name which although literally true “falsely represents” that the product comes from somewhere else. Article 23 of the TRIPS Agreement says that all governments must provide the owners of GI the right, under their laws, to prevent the use of a geographical indication identifying wines not originating in the place indicated by the geographical indication. This applies even where the public is not being misled, where there is no unfair competition and where the true origin of the good is indicated or the geographical indication is accompanied by expressions such as “kind”, “type”, “style”, “imitation” or the like. Similar protection must be given to geographical indications identifying spirits. দেখুনঃ # Geographical Indication (GI) এর সুবিধাঃ Geographical Indication (GI) উৎপাদক দের তাদের পণ্যের স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করে যাতে অন্য দেশের সম জাতীয় পণ্য থেকে তাদের পণ্য আলাদাভাবে চেনা যায়। এর ফলে তাদের এই পণ্যের আলাদা রেপুটেশন তৈরী হয় যার ফলে বিশ্ব বাজারে তারা তাদের পণ্যের জন্য ভালো দাম পান। ট্রেডমার্কের সাথে এর পার্থক্য হলো ট্রেডমার্ক কোন ব্যাক্তি বা গোষ্ঠী নিতে পারেন কিন্তু Geographical Indication (GI) একটি দেশ প্যাটেন্ট করতে পারে যা তাদের দেশের পণ্য হিসেবে বিশ্ব বাজারে পরিচিতি পাবে, যাতে তাদের স্থানীয় উৎপাদকরা ভালো দাম পাবে। # বাংলাদেশ সরকার কি করছে??? ভারত ১৯৯৯ সালে Geographical Indications of Good (Registration & Protection) Act করে ফেলে এবং এর অধীনে পণ্য প্যাটেন্ট করা শুরু করে। এরপর দেশটি বাংলাদেশের এই তিনটি ঐতিহ্যবাহী পণ্যের নিবন্ধন করে। ভারতের এই বিষয়ক ওয়েবসাইট ঃ কিন্তু আমাদের সরকার এই আইনটি করার কোন উদ্যোগ নেয় নি তখন। এটিকে ফেলে রাখা হয় হিমাগারে। ২০০৮ সাল থেকে ‘ভৌগলিক নির্দেশক’ আইনের খসড়া এখনো মতামতের জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে ঝুলছে। সরকার Geographical Indication Act 2012 এর খসড়া আইন পাস করি করি করেও করছে না। শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া স্বীকার করেছেন, আইনটি করতে অনেক দেরি হয়ে গেছে। তবে মন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন, জাতীয় সংসদের আগামী শীতকালীন অধিবেশনেই আইনটি সংসদে উত্থাপন করা হবে। খসড়ার ‘দুর্বলতা’: আইনটির খসড়ার দুর্বলতা অনেক বলে মনে করছেন কেউ কেউ। বাংলা কেমিক্যালের নির্বাহী প্রধান এম এস সিদ্দিকী বলেন, ‘আমাদের আইনটি বৈশ্বিক মানের নয়। খসড়ায় আসলে আমলাদের ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। নিজেদের সম্পদ রক্ষা করার চেয়ে শাসন করার বিষয়ে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে।’ [৩ – আমজনতা] # এই পণ্য গুলো বাংলাদেশেরঃ তিন ঐতিহ্যের ইতিকথা: প্রাচীনকালেই বাংলার সূক্ষ্ম বস্ত্রের খ্যাতি ছিল। জামদানির প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রে। ঢাকা অঞ্চলকে ঘিরে জামদানি তাঁতের প্রচলন এবং প্রসার ঘটে। আজ বাংলার এই প্রাচীন শিল্পের মালিকানা হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার ঝুঁকির মুখে। ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ রাজ্যের পূর্ব গোদাবরী জেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের তাঁতিরা এবং দুটি নিবন্ধিত তাঁতি সংগঠন ‘উপ্পাদা জামদানি’ নামে জামদানি শাড়ির নিবন্ধন করিয়েছে। নকশিকাঁথা এখনো বাংলার গ্রামীণ জীবনের এক ঘনিষ্ঠ অনুষঙ্গ। পল্লিকবি জসীমউদ্দীন একে নাগরিক জীবন এবং পরে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তুলে ধরেছিলেন তাঁর ১৯২৯ সালে প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ নক্সী কাঁথার মাঠ দিয়ে। আর দেশে রাজশাহীর ফজলি আমের পরিচিতি ও জনপ্রিয়তার কথা বলাই বাহুল্য। [৪- আমজনতা] জামদানি নিয়ে ইত্তেফাক এর সাম্প্রতিক এই রিপোর্ট টা পড়ুনঃ # বিশেষজ্ঞরা যা বলেন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক রাজিয়া বেগম বলেন, ‘কোনো বিচারেই এসব পণ্য ভারতীয় হতে পারে না। পণ্য তিনটির স্বত্ব ভারতের কাছে থাকলে এসবের অভ্যন্তরীণ ভোগ বা বিপণনে হয়তো সমস্যা হবে না, তবে রপ্তানি সমস্যার মধ্যে পড়বে।’ বাংলাদেশের জামদানি শাড়ি সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয় ভারতেই। ভারত এই শাড়ির স্বত্ব পেলে বাংলাদেশের রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হতে পারে, এমন আশঙ্কা করছেন জামদানি শাড়ির ব্যবসায় সম্পৃক্ত ব্যক্তিরা। জামদানি উৎপাদনকারীদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি এম আর মোস্তফা বলেন, ‘ভারত যখন কিছুদিন আগে উপ্পাদা জামদানি নিজেদের নামে নিবন্ধন করে, তখন আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম। আমরা হয়তো অচিরেই এই পণ্য ভারতে রপ্তানিতে বাধার মুখে পড়ব।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রাফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ভারতের এই নিবন্ধনের বিরুদ্ধে মামলা করার সুযোগ আছে। বাসমতী চাল যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের নামে নিবন্ধন করানোর পর এ নিয়ে মামলা হয়েছে। এর স্বত্ব এখন ভারত ও পাকিস্তানের পাওনা। তাই আমাদেরও হতাশ হওয়ার কিছু নেই।’ কপিরাইট আইন বিশেষজ্ঞ তানজীব উল আলম বলেন, ‘বাংলাদেশ, ভারত বা অন্য যে কেউ এ ধরনের পেটেন্টকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে। কারণ, নকশিকাঁথা শুধু ভারতেই হয়, এমন ভাবা যৌক্তিক নয়। ফজলি আম বা জামদানি শাড়ির ক্ষেত্রেও একই কথা বলা যায়। আমাদের ঢাকাই শাড়ির ঐতিহ্য অনেক পুরোনো। তাই আমরা যদি ঢাকাই জামদানি নামে আমাদের শাড়ির পেটেন্ট করি, তাহলে কারও কিছু করার নেই।’ এই বক্তব্যের সমর্থন পাওয়া যায় কপিরাইট নিয়ে কাজ করা এনামুল হকের কথায়ও। তিনি বলেন, ‘ভারত একটি ভিন্ন নাম দিয়ে জামদানি শাড়ি নিবন্ধন করিয়েছে। আমরা যদি আমাদের জামদানি ঢাকাই জামদানি হিসেবে নিবন্ধন করি, তবে সেখানে কেউ বাধা দিতে পারবে না।’ তবে বিশেষজ্ঞদের সবাই একটি ব্যাপারে একমত। তা হলো, বিস্তর সময় নষ্ট হয়েছে। এখন দ্রুত আইনটি করা দরকার। নইলে আরও অনেক দেশি সম্পদ অন্যের নামে নিবন্ধিত হবে। পাশাপাশি বিশেষজ্ঞরা সব দেশজ পণ্য এবং প্রজাতির একটি তথ্যভান্ডারের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন। তালিকা তৈরি করেই আইনের আওতায় নিবন্ধন শুরু করতে হবে বলে মনে করেন তাঁরা। [৫- আমজনতা] # আমরা আমজনতা কি করতে পারি ? আপনি এখন হয়তো ভারতের মা বাপ তুলে গালি দিচ্ছেন। সরকারকে গালি দিচ্ছেন। একটু থামুন! ভাই গালি দিলে কি কোন কাজের কাজ হবে? আপনি বলবেন আমি কি করতে পারি ? ভাই আপনি অনেক কিছু করতে পারেন। আসলে আমরা আমজনতা চাইলে অনেক কিছু করতে পারি। শুধু দরকার আমাদের একতাবদ্ধহওয়া!! আমরা কি করতে পারি তা কয়েকটি পয়েন্টে তুলে ধরছি ঃ ১। প্রথমেই দরকার সচেতনতা । এই সম্পূর্ণ জিনিসটি আপনি তো এখন জানলেন, তাহলে এখন আপনাদের বন্ধুদেরও জানান। যারা এখনও অজ্ঞ তাদের জানান আমাদের ঐতিহ্যবাহী পণ্য গুলো কিভাবে ভারতের দখলে চলে যাচ্ছে। এই লেখাটি আপনার ওয়ালে শেয়ার করুন। ২। WTO চুক্তির পর ১৪ বছর চলে গিয়েছে। ১৪ বছর তো কম সময় না। বিস্তর সময় নষ্ট হয়েছে। এখন দ্রুত Geographical Indication Act 2012 আইন হিসেবে পাস করাতে হবে। আপনি বলবেন এই কাজটা তো সরকারের , আমরা কি করতে পারি?? এই মুহূর্তে আমাদের কৃষি, শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অন্যতম কাজ হচ্ছে আমাদের দেশিয় পণ্যগুলো চিহ্নিত করা এবং তা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংস্থার ‘Geographical indication (GL)’ আইনের অধীনে নিবন্ধন করা। এ সকল পণ্যের মধ্যে রয়েছে ঢাকার ‘জামদানি শাড়ি’, ফরিদপুরের ‘নকশীকাঁথা’, চাঁদপুরের ‘ইলিশ’, রাজশাহীর ‘ফজলি আম’, বগুড়ার ‘দধি’, সুন্দরবনের ‘মধু’ সহ আরও অনেক পণ্য। আমাদের উচিত সরকারকে দেশের সম্পদের স্বত্ব পুনরুদ্ধারে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে জোরালো আবেদন জানানো। দেশের সর্ব মহল থেকে তীব্র আন্দোলন ছাড়া এটা সম্ভব হবে না। আমরা সরকারকে চাপ দিতে পারি যাতে দ্রুত সম্ভব আইনটি বাস্তবায়ন করা হয়। সরকার যাতে অনতিবিলম্বে জি আই এ আইনের বাস্তবায়ন করে দেশের সকল ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সম্পদ, প্রাণবৈচিত্র্য এবং কৃষিজ পণ্যের মেধাস্বত্ব অধিকার তথা মালিকানা স্বত্ব প্রতিষ্ঠিত করে এবং জামদানি শাড়ি, জামদানি শাড়ি, নকশি কাঁথা, ফজলি আম এর স্বত্ব ফিরে পাওয়ার জন্য ভারতের বিরুদ্ধে এবং নিম, হলুদ, বাসমতী সহ বিভিন্ন ফসলের পেটেন্ট ফিরে পাওয়ার জন্য মার্কিন কম্পানির বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে যাওয়ার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের কাছে তীব্র দাবী জানানো। কিভাবে? সভা, সেমিনার, আলোচনা অনুষ্ঠান, মানববন্ধন, সচেতনতা মূলক কারযক্রম, পত্রপত্রিকায় , ব্লগ ,ফেসবুকে লেখালেখির এর মাধ্যমে। শুরুটা ইতিমধ্যে হয়ে গেছে …… *** GI আইনটি কারজকর করার দাবিতে আন্দোলন করছে ‘বিল্ড বেটার বাংলাদেশ’ (বি-কিউব) নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। ইতিমধ্যে তারা শিল্পমত্রীর সাথে একটি গোল টেবিল আলোচনা সভাও করে ফেলেছে। এই বিষয়ে সচেতনতা মূলক কাজ চালিয়ে যাচ্ছে তারা। লক্ষ্য করুনঃ বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী পণ্যের আন্তর্জাতিক স্বত্ব গ্রহণে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে মানববন্ধন এই বিষয়টি নিয়ে আগামী ১৯ অক্টোবর ২০১২, শুক্রবার বিকাল ৩.৩০ মিনিটে ঢাকা প্রেস ক্লাবের সামনে বিশাল একটি মানববন্ধনের আয়োজন করেছে ম্যাঙ্গো পিপল ।| আমজনতা গ্রুপ । আপনিও যোগ দিন! মনে রাখবেন, আমাদের ঐতিহ্যকে আমাদেরই বাঁচাতে হবে। আমাদের দেশ আমাদেরকেই রক্ষা করতে হবে। বাইরের দেশের কেউ এসে রক্ষা করে দিয়ে যাবে না। দেশের স্বার্থে একাত্ম হোন… দলে দলে যোগ দিন এই বিশাল মানব বন্ধনে। #একটা আশার কথা হলো ঃ বাংলাদেশের নিজস্ব সম্পদ ফজলি আম, জামদানি শাড়ি এবং নকশি কাঁথার পেটেন্ট করে নিয়েছে ভারত, কিন্তু এখনি সব শেষ হয়ে যায়নি। বাংলাদেশ যদি জি আই এ আইন বাস্তবায়ন করে এসব পণ্যের নিবন্ধনের জন্য বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার কাছে আবেদন করে এবং উপর্যুক্ত তথ্য প্রমাণ দিতে পারে তবে এসব পণ্যের পেটেন্ট ফিরে পাবে বাংলাদেশ। এর আগে মেক্সিকো এবং ভারত আমেরিকার বিরুদ্ধে মামলা করে তাদের পণ্যের স্বত্ব ফিরে পায়। ২০০০ সালে মেক্সিকোর উচ্চ লিপিড সম্পন্ন বিশেষ ভুট্রার পেটেন্ট নিয়ে নেয় মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানি ডুপন্ট, কিন্তু পরবর্তীতে মেক্সিকো এর বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দেয় এবং ওই শস্যের মেধাস্বত্ব ফিরে পায়। বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের বাসমাতি চালের উপর যুক্তরাষ্ট্রের ‘ রাইসটেক’ কোম্পানি মালিকানা দাবী করে ‘টেকনোমতি’ নামে বাজারজাতকরণ করা শুরু করে দেয়; কিন্তু ভারত এবং পাকিস্তানের মামলার কারনে মার্কিন কোম্পানি বাধ্য হয় ভারত এবং পাকিস্তানকে বাসমতী চালের স্বত্ব ফিরিয়ে দিতে। মার্কিন কোম্পানি মনসেন্টো ভারতের বাজার দখলের জন্য ভারতীয় বেগুনের জেনেটিক্যাল পরিবর্তন করে নতুন জাত বের করে পুরো বেগুনের উপরই মেধাস্বত্ব দাবি করলে ভারত ২০১০ সালে বায়োপাইরেসির অভিযোগে এবং ভারতের জীববৈচিত্র্য আইন (BDA) ভঙ্গের দায়ে মনসেন্টোর বিপক্ষে মামলা ঠুকে দেয় এবং বর্তমানে ভারতীয় বেগুনের মালিকানা স্বত্ব ফিরে পায়। এরকম অনেক উদাহরণ আছে। বাংলাদেশও তার স্বত্ব হারানো পণ্যের পেটেন্ট ফিরে পেতে পারে।এজন্য ভারতের সাথে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার ভিত্তিতে এদেশেরই ঐতিহ্যবাহী ভৌগোলিক পণ্য জামদানি শাড়ি ও ফজলি আমের মালিকানা স্বত্ব ফিরিয়ে আনতে হবে। অন্যথায় আন্তর্জাতিকভাবে বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার মাধ্যমে উপর্যুক্ত প্রমাণের ভিত্তিতে ভারতের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নিতে হবে। এছাড়া নিম, বাসমাতির চাল, হলুদ ইত্যাদির মেধাস্বত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য বায়োপাইরেসির মাধ্যমে বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্য ধংসের অভিযোগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বহুজাতিক কোম্পানি এবং ভারতের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে যেতে পারে বাংলাদেশ সরকার। কেননা আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য সনদ (সি বি ডি, ১৯৯২) অনুযায়ি প্রতিটি দেশ তার নিজস্ব জীববৈচিত্র্যের অন্তর্ভুক্ত জেনেটিক সম্পদ ও লোকায়ত জ্ঞানের উপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে পারবে এবং এই চুক্তিতে বলা হয়েছে মেধাস্বত্ব অধিকার যেন জীববৈচিত্র্যের টেকসই ব্যাবহারকে বাধাগ্রস্ত না করে। [৬] [লিখেছেন – Zobaer Al Mahmud] #জেনে রাখুনঃ মেধাস্বত্ব মালিকানা হারানোর ফলে ভবিষ্যতে ট্রিপস চুক্তির বাস্তবায়ন শুরু হলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশের জামদানি ও নকশিকাঁথার উৎপাদন ও বিপণন, হারিয়ে যাবে আমাদের সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার। এছাড়াও বাধাগ্রস্ত হবে আমাদের কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা। হাতছাড়া হয়ে যাবে আমাদের লোকায়ত জ্ঞান। অর্থাৎ সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্য ও সাংস্কৃতিক পণ্য পেটেন্ট আগ্রাসন তথা বায়োপাইরেসির শিকার। বায়োপাইরেসি হচ্ছে অন্যায্য পেটেন্টের মাধ্যমে অন্য দেশ ও লোকালয়ের জেনেটিক সম্পদ বিশেষ করে উদ্ভিদ এবং প্রাণীজ সম্পদ আত্মসাৎকরণ। গত দুই দশক ধরেই পশ্চিমা বিশ্বের বহুজাতিক কোম্পানিগুলো যেমন মনসেন্টো, ইউনিলিভার, ডুপন্ট তৃতীয় বিশ্বের ঐতিহ্যবাহী লোকায়ত জ্ঞান, প্রাণ বৈচিত্র্য তথা জেনেটিক সম্পদকে অবৈধভাবে পেটেন্ট করে নিয়ে এসবের উপর তাদের নিরঙ্কুশ মালিকানা প্রতিষ্ঠা করার প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে। এ ধরনের পেটেন্ট আগ্রাসনের সুযোগ করে দিয়েছে বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার ট্রিপস চুক্তির ২৭.৩ (খ) ধারা যেখানে দুনিয়ার সব প্রাণ ও প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার ওপর পেটেন্ট করার বৈধ অধিকার রাখা হয়েছে। ব্যাবসায়িকভাবে অবাধ মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হিসেবে কাজ করবে এই মেধাস্বত্বের অধিকার। প্রাণ এবং জীবনের পেটেন্টকরণ শুধু অনৈতিক এবং অন্যায়ই নয়, তা জীববৈচিত্র্যের পণ্যকরণ ও বাণিজ্যকীকরণের মাধ্যমে তৃতীয় বিশ্বের স্থানীয় জনসাধারণের লোকায়ত জ্ঞানের উপর বহুজাতিক কর্পোরেশনের মালিকানা প্রতিষ্ঠা করে ঐতিহ্যবাহী সম্পদের লুণ্ঠনের পথ প্রশস্ত করে দিবে। তাই পেটেন্ট আগ্রাসন এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো ছাড়া আর কোন উপায় নাই। পেটেন্ট আগ্রাসন রোধে একদিকে যেমন প্রাণ ও জীবনের উপর পেটেন্ট করার বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে তেমনি এই অন্যায্য আইন নিরসন না হলে আমাদের নিজস্ব সম্পদের পেটেন্ট নিশ্চিত করার জন্য পর্যাপ্ত পদক্ষেপও আমাদেরই নিতে হবে। এই প্রেক্ষিতেই সরকারের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে অতিদ্রুত জি,আই,এ আইন প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন করে আমাদের নিজস্ব সম্পদের মেধাস্বত্ব সুনিশ্চিত করার দাবী জানাচ্ছি ধান, চাল, পাট , নকশীকাঁথা এসবের পেটেন্ট করতে হবে এটা একটা ধান্দাবাজি আইন, বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার ট্রিপস চুক্তির ২৭.৩ (খ) ধারা যেখানে দুনিয়ার সব প্রাণ ও প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার ওপর পেটেন্ট করার বৈধ অধিকার রাখা হয়েছে, এই আইনের তীব্র প্রতিবাদ জানানো উচিত। একসময় জানতাম সফটওয়্যার এর উপর পেটেন্ট হয়, আবিষ্কার এর উপর পেটেন্ট হয়, বহুজাতিক কোম্পানি মানে সাম্রাজ্যবাদীরা এখন উদ্ভিদ, প্রাণী থেকে শুরু করে সকল প্রাণের পেটেন্ট শুরু করে দিয়েছে অবাধ মুনাফা অর্জনের জন্য, তাই তাদের এই অন্যায় এর প্রতিবাদ জানানো দরকার। আগামি দিনে দেখবি অক্সিজেন, হাইড্রোজেন এর উপর ও পেটেন্ট করবে এইসব তথাকথিত সভ্য দুনিয়ার বণিকরা আমাদের দুইভাবেই আগ্রসর হতে হবে, এজন্য একদিকে সরকার এবং সচেতন মহলকে বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার ট্রিপস চুক্তির ২৭.৩(খ) ধারা অনুযায়ী প্রাণ ও প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার পেটেন্টকরণের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানাতে হবে। বর্তমানে দক্ষিন আমেরিকা ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশের ১১৮টি সংগঠন সব ধরনের প্রাণ ও জীবনের উপর পেটেন্ট বন্ধ করার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। প্রাণ ও জীবনের উপর পেটেন্টের বিপক্ষে তৃতীয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের (মেক্সিকো, ভারত, দক্ষিন কোরিয়া) কৃষক ও আদিবাসীদের বিভিন্ন ফেডারেশন যে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করছে তার সাথে এদেশের কৃষক ও জনগণকে সম্পৃক্ত হতে হবে। সরকারকে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থাসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে অন্যায্য মেধাস্বত্ব অধিকার আইন বাতিলের জন্য কূটনৈতিক এবং রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় হতে হবে। অন্যদিকে যতক্ষন এই ২৭.৩(খ) থাকবে ততক্ষন আমাদের নিজস্ব সম্পদের পেটেন্ট ও করতে হবে। [৭] [ লিখেছেন- Zobaer Al Mahmud ] [১] তথ্য সুত্রঃ [২] [৩] [৪] পয়েন্টের লেখা নেয়া হয়েছে আমজনতা পোস্ট থেকে এবং প্রথম আলো নিউজঃ [৬] [লিখেছেন – Zobaer Al Mahmud ] [৭] [ লিখেছেন- Zobaer Al Mahmud ] কৃতজ্ঞতাঃ ব্লগার অধরা, পোস্ট রয়েল ইন্ডিয়ান টাইগার – – – – – প্রথম প্রকাশ এখানে